‘‌এবার আমাদের সোনার বাংলা গড়তে দিন’‌, রাজ্যে এসে ডাক দিলেন অমিত শাহ

নিজস্ব সংবাদদাতা খবর ২৪: রাজ্য এসেছেন অমিত শাহ। নিউটাউনে এদিন দলীয় কর্মীদের সভায় তিনি যা বললেন তাতে নতুন করে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের দামামা বেজে গেল। এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলার মানুষকে বলেন, ‘‌কংগ্রেসকে সুযোগ দিয়েছেন, সিপিএমকে একাধিকবার দিয়েছেন, দু’‌বার তৃণমূলকে সুযোগ দিয়েছেন। এবার আমাদের দিন সোনার বাংলা গড়তে।’‌শুধু তাই নয়, এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে চলা তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধেও একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি। বলেন, ‘‌মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুধু লক্ষ্য ভাইপোকে সুবিধা করে দেওয়া। ভোটব্যাঙ্কের জন্য আলাদা আইন আর জনগণের জন্যে আলাদা আইন করেছেন তিনি। কৌশলে প্রশাসনের রাজনৈতিকরণ করেছেন, রাজনীতিকে নষ্ট ও দুর্নীতিযুক্ত করে দিয়েছেন। সাইক্লোন আমফান ও করোনাতেও দুর্নীতি করেছেন। ভাইপোর জন্যে আলাদা আইন চলে এখানে। আমি বিজেপি শাসিত রাজ্য আগে আর পরের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় রাজি।’‌ তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে তিনি হাথরস প্রসঙ্গও টেনেছেন। বলেছেন, ‘‌২০১৮ সালের পরে এনসিবিতে ক্রাইমের তথ্য দেওয়া হয় না। কেন তথ্য দিতে চাওয়া হয় না?‌ বাংলার মহিলারা কেন অসুরক্ষিত?‌ সেই প্রশ্ন আমাদের করা উচিত। আমাদের একাধিক কর্মী খুন হয়েছেন। আপনি শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন। এফআইআরের পরে কতজন গ্রেফতার হয়েছেন। সেই কারণে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন।’‌বাংলায় আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পকে অস্বীকার করেছে রাজ্য সরকার। সেই নিয়ে অমিতের কটাক্ষ, ‘‌এখানকার কৃষকদের অপরাধ কোথায়? প্রধানমন্ত্রী আয়ুষ্মান যোজনায় বাংলার কেউ আসেনি। কিষাণ যোজনায় কেউ আসেনি। তাই বাংলায় এমন সরকার আনুন যারা মোদিজির বিকাশ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন।’‌ এদিন আগের মতোই যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী শুনিয়েছে অমিত শাহ–র গলা। তিনি বলেছেন, ‘‌ বিধানসভা ভোটে ২০০ বেশি আসন পাব এখানে। আমরা এখানে সরকার গঠন করব। বাংলার মানুষ আমাদের সহায়তা করবে। এব্যাপারে আমরা নিশ্চিত। বিহারে আমি যাইনি কারণ আমার করোনা হয়েছিল। বাংলায় আমার বিশেষ ফোকাস রয়েছে। এখানে লড়াই করতে চাই ও জিততে চাই। ৩৫৬ নিয়ে চিন্তা করার কিছু নেই। কারণ এপ্রিলে সরকার বদলাবে। তবে রাজ্যপালের থেকে যে রিপোর্ট পাওয়া হয় তার ভিত্তিতে আলোচনা হয়। হিংসা এখানে টিএমসি’র ওপর নির্ভর করছে। তবে এটা স্পষ্ট সরকার বদল হচ্ছে। রাজ্যপাল নিজের কাজ ঠিক করছেন। রাজ্যপালের সম্পর্কে যে বার্তা দেওয়া হচ্ছে তা ঠিক নয়। কিন্তু আমার একটা প্রশ্ন, রাজ্যপাল দার্জিলিং গেছেন ওখানে জেলাশাসক দেখা করতে গিয়েছিলেন তাকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। এটা কি ঠিক?’‌কেন্দ্রের পক্ষ থেকে যথেষ্ট অর্থ সাহায্য পাওয়া যায় না, এই নিয়ে বারবার সরব হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সেই অভিযোগেরও উত্তর দিয়েছেন অমিত শাহ। বলেছেন, ‘‌প্রতি মাসে চিঠি উনি লেখেন পয়সার জন্যে। আমরাও দিতে রাজি। কিন্তু সেই পয়সা ক্যাডারদের পকেটে যাবে, একথা আমরা জানি।’‌ সম্প্রতি বিমল গুরুংকে প্রকাশ্যে দেখা গিয়েছে। পাহাড় রাজনীতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিজেপি শিবির থেকে বিমল সরে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করেছেন। তাই নিয়ে অমিত শাহর কটাক্ষ, ‘‌বিমল গুরুং গোর্খাল্যান্ডের জন্যে লড়ছেন। তাহলে কেন এবার গ্রেফতার হচ্ছে না তাঁকে?‌ অনেক অভিযোগ ছিল তো।সিএএ–এনআরসি নিয়ে বারবার সরব হয়েছে তৃণমূল। ময়দানে নেমেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সেই নিয়েই অমিত শাহের মন্তব্য, ‘‌সিএএ আইন দ্রুত প্রয়োগ হবে। করোনার পরিস্থিতি দেখে নিয়ে আইন প্রয়োগ করা হবে।’