মিলল রেলওয়ে বোর্ডের অনুমতি, ১ অক্টোবর থেকে রাজ্য পাচ্ছে আরও ৫টি স্পেশাল ট্রেন

নিজস্ব সংবাদদাতা খবর ২৪: যাত্রী চাহিদার কথা মাথায় রেখে ৫টি স্পেশাল ট্রেন পেতে চলেছে রাজ্য। পূর্ব রেল ১৩টি রুটে স্পেশাল ট্রেন চালাতে চেয়েছিল। এর মধ্যে ৫টি ট্রেন চালানোর অনুমতি দিল রেলওয়ে বোর্ড। সূত্রের খবর আগামী ১ অক্টোবর থেকে এই ট্রেনগুলি চলাচল করবে। বাছাই করা মেল, এক্সপ্রেস চালাতে চেয়ে রেলওয়ে বোর্ডের কাছে আবেদন জানিয়েছিল পূর্ব রেল। পূর্ব রেলের প্রিন্সিপাল চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার এই বিষয়ে চিঠি দিয়েছিলেন, প্রিন্সিপাল চিফ অপারেশনস ম্যানেজারকে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছিল পূর্ব রেলের তিন ডিভিশন হাওড়া, শিয়ালদহ ও মালদহ থেকে মেল এক্সপ্রেস ট্রেন পরিষেবা চালু করার। লকডাউন অধ্যায়ে রেল পরিষেবা বন্ধ দেশ জুড়ে। শুধুমাত্র বিশেষ কিছু দূরপাল্লার ট্রেন চলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যদিও যাত্রীদের চাহিদা তাতে পূরণ হচ্ছে না।এই অবস্থায় বিশেষ কতগুলি রুটে ট্রেন চালাতে না পারালে মুশকিলে পড়ছেন যাত্রীরা। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে রেল না চলায় আর্থিক ভাবেও সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। তাই লাভজনক ১৩টি রুটে ট্রেন চালাতে এবার মন্ত্রকের কাছেই আগ্রহ প্রকাশ করল পূর্ব রেল। তারা যে সমস্ত ট্রেন চালাতে চেয়েছে তার মধ্যে অতি গুরুত্বপূর্ণ হল শিয়ালদহ রাজধানী এক্সপ্রেস, দার্জিলিং মেল ও সরাইঘাট এক্সপ্রেস। যে ১৩টি ট্রেনের কথা বলা হচ্ছে, তাতে যাত্রী চাহিদা, ২০১৯-২০ সালের হিসেবে প্রতি ট্রিপে আয়ের অঙ্ক কি ছিল তার উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে।রেলওয়ে বোর্ড সূত্রে খবর, হাওড়া থেকে গুয়াহাটি মধ্যে চলবে একটি স্পেশাল। শিয়ালদহ-দিল্লি মধ্যে চলবে একটি স্পেশাল। হাওড়া-জামালপুরের মধ্যে চলবে একটি স্পেশাল। মালদহ-নয়া দিল্লির মধ্যে চলবে দুটি স্পেশাল ট্রেন৷ পূর্ব রেল সূত্রে খবর, এই সব রুটে চাহিদা ব্যাপক। তাই আপাতত এই রুট চালু করে দেওয়া হচ্ছে। যে সমস্ত ট্রেন চালাতে আবেদন জানানো হয়েছিল। তাদের মধ্যে আছে।১২৩৪৫/৪৬ হাওড়া-গুয়াহাটি সরাইঘাট এক্সপ্রেস – প্রতিদিন গড়ে ১২৫.৬১% যাত্রী থাকে। প্রতি ট্রিপে ৯.৭৫ লাখ আয় করে। কলকাতা থেকে গুয়াহাটির একমাত্র সরাসরি যোগাযোগ এই ট্রেনের মাধ্যমেই।১২৩৪৩/৪৪ শিয়ালদহ-এনজেপি দার্জিলিং মেল- কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গের যাওয়ার জন্যে এটা সবচেয়ে চাহিদার ও পছন্দের ট্রেন। যাত্রী চাহিদা থাকে গড়ে ১০৫.৮২%। গড়ে প্রতি ট্রিপে আয় হয় ৮.৮৭ লাখ টাকা। যদি প্রতিদিন না ট্রেন চালানো যায়, তাহলে সপ্তাহে তিনদিন চলুক। শিয়ালদহ থেকে সোম, বুধ, শুক্র। এনজেপি থেকে মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনিবার।১২৩১৩/১৪ শিয়ালদহ-নিউ দিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস- হাওড়া রাজধানীর মতো, এটার চাহিদা ব্যাপক। এই ট্রেন থেকে গড়ে আয় হত ২৮.৩৩ লাখ টাকা।এছাড়া দিল্লি বা উত্তর ভারতের জন্যে চালানো যেতে পারে। ১২৩১/৩২ – হাওড়া-জম্মু তাওয়াই হিমগিরি এক্সপ্রেস৷ প্রতি ট্রিপে গড়ে আয় ১৮.৭১ লাখ টাকা১২৩৭৯/৮০ শিয়ালদহ-অমৃতসর এক্সপ্রেস – এখন কলকাতা স্টেশন থেকে সপ্তাহে দু’দিন দূর্গানিয়া এক্সপ্রেস চলছে। ১ জুন থেকে এই রুটে ট্রেন চালিয়ে যেখানে প্রতি ট্রিপে গড়ে আয় হচ্ছে ১৬.৩৫ লাখ টাকা। ফলে ট্রেন চালালে লাভ হবে, যাত্রীও মিলবে।১৩৪১৩/১৪ মালদহ টাউন-দিল্লি ত্রি-সাপ্তাহিক ফারাক্কা এক্সপ্রেস – মালদহ থেকে এই রুটের ট্রেনের চাহিদা অনেক। গড়ে প্রতি ট্রিপে আয় হয় ৯ লাখের কাছাকাছি।এছাড়া চালাতে চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। ১৫০৪৭/৪৮ কলকাতা থেকে গোরক্ষপুর পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেস। সপ্তাহে চারদিন। ১৩১৮৫/৮৬ শিয়ালদহ-জয়নগর গঙ্গাসাগর এক্সপ্রেস। ১৩০২১/২২ হাওড়া-রক্সৌল মিথিলা এক্সপ্রেস। ১৩০৭১/৭২ হাওড়া-জামালপুর এক্সপ্রেস।১৩১৫৯/৬০ কলকাতা-যোগবাণী ত্রি-সাপ্তাহিক এক্সপ্রেস। ১৩৫৭৬/৭৫ যশিডি-তাম্বারাম সাপ্তাহিক এক্সপ্রেস।১২৩৬১/৬২ আসানসোল-ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাস সাপ্তাহিক এক্সপ্রেস।পূর্ব রেলের তরফ থেকে রেলওয়ে বোর্ডের কাছে সমীক্ষা করে জানানো হয়েছিল এই ১৩ রুটে যাত্রীদের চাহিদা আছে। আর যদি ট্রেনগুলি চলে তাহলে মাসে ২৩ কোটি আয় করা যাবে। রাজ্য থেকে ধাপে ধাপে অবশেষে সেই পরিষেবা চালু হতে চলেছে।