দারিদ্র্য আর কর্মহীনতা, দক্ষিণ আফ্রিকায় বাড়ছে বন্যপ্রাণীর হত্যা আর পাচার

নিজস্ব সংবাদদাতা খবর ২৪: ঠিক ভাবে দু’বেলা খেতে না পেলে মানুষ যে নিজের চিন্তাতেই বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ে, এ আর নতুন কথা কী! সম্প্রতি প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, দারিদ্র্য আর কর্মহীনতার জেরেই না কি দক্ষিণ আফ্রিকায় হু-হু করে বেড়ে চলেছে বন্যপ্রাণী হত্যা এবং পাচারের মতো সংবেদনশীল অপরাধ। দক্ষিণ আফ্রিকার থানায় আপাতত এই অপরাধে বন্দি হয়ে আছেন যাঁরা, তেমন ৭৩ জনের সঙ্গে কথাবার্তার ভিত্তিতে এ হেন খবর বিশ্বের সামনে তুলে ধরছে আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ দল।খবরটির বিশেষত্ব এখানেই যে অনেক রকম কারণেই মানুষ বন্যপ্রাণী হত্যা এবং পাচারমূলক ব্যবসাতে যোগ দিতে পারে। এর নেপথ্যে কিছুটা হলেও কাজ করতে পারে তাঁর নিষ্ঠুর প্রবৃত্তিও। কিন্তু মূলত যে দারিদ্র্যের কারণেই দক্ষিণ আফ্রিকায় এই সমস্যা বাড়ছে, সেই যুক্তিতেই জোর দিয়েছেন এক বন্দি। তাঁর মতে, হালফিলে দুই শ্রেণির মানুষকে বহুল পরিমাণে যুক্ত হতে দেখা যাচ্ছে এই ব্যবসার সঙ্গে। এক দল যাঁরা জন্ম থেকেই গরিব, আরেক দল যাঁরা কাজ হারিয়ে সম্প্রতি বিপদে পড়েছেন।আরেক বন্দি অকপটে জানিয়েছেন যে, তিনি তাঁর প্রথম সন্তানকে ভাল স্কুলে পাঠানোর তাগিদে এসেছিলেন এই পেশায়। তিনি শৈশবে যা কিছু পাননি, তার সবটা উজাড় করে দিতে চেয়েছিলেন সন্তানকে। তেমনই আরেকজনের বিবৃতি- হাতে অন্য কাজ থাকলে তিনি কখনই এই পেশায় আসতেন না।অবশ্য এ কাজে যুক্ত বন্ধুদের বিলাসবহুল জীবনযাত্রা দেখেও যে অনেকে এগিয়ে এসেছেন, সে কথাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। জনৈক বন্দির বক্তব্য, তাঁর সব বন্ধুরা গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়ান, অতএব ভাল থাকার টান এবং কিছুটা হলেও ঈর্ষা তাঁকে টেনে এনেছে এই পেশায়।কথা হল, দক্ষিণ আফ্রিকা কিন্তু এই বন্যপ্রাণী হত্যা এবং পাচারের সমস্যা নিয়ে কম দিন হল ভুগছে না। বিশেষ করে এশিয়ায় গন্ডারের শিংয়ের বিপুল চাহিদার জন্য এ দেশে গত দশক থেকেই বিপদের মুখে রয়েছে বন্যপ্রাণ। সমীক্ষা মোতাবেকে, গত দশকে পাক্কা ৮,২০০ গন্ডারকে প্রাণ দিতে হয়েছে এই চাহিদার জোগানে! তার পরেও সরকার কেন জোর দিচ্ছেন না দারিদ্র্য দূরীকরণে- প্রশ্ন উঠছে বিশেষজ্ঞমহলে।

