আস্থা ভোটের আগেই মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন কমল নাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা খবর ২৪: ভোপাল: আস্থা ভোটের আগেই মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন কমল নাথ (Kamal Nath)। মুখ্যমন্ত্রী (Madhya Pradesh ) পদ থেকে ইস্তফার সময় কমল নাথ তাঁর সরকারের পতনের জন্যে কাঠগড়ায় তুলেছেন বিরোধী দল বিজেপিকে। গণতন্ত্রের হত্যা করা হচ্ছে, আর তা করছে ভারতীয় জনতা পার্টিই, এমন কথাই বলেন তিনি। পাশাপাশি তাঁর (Kamal Nath ) অভিযোগ, তাঁর সরকারকে প্রথম দিন থেকেই ফেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছিল বিজেপি। ২২ জন কংগ্রেস বিধায়ক একসঙ্গে পদত্যাগ করায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করা একরকম অসম্ভব ছিল কমল নাথ সরকারের পক্ষে। তাই সেই হারের আঁচ পেয়েই আস্থা ভোট (Trust Vote ) হওয়ার আগেই ইস্তফা দিলেন তিনি, মনে করছে রাজনৈতিক মহল।গতকালই (বৃহস্পতিবার) শুক্রবার বিকেল ৫টার মধ্যে আস্থা ভোটের (Floor Test) মাধ্যমে কমল নাথ সরকারকে (Kamal Nath Government) নিজের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বিজেপির করা এক মামলার পরিপ্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালত জানায় যে মধ্যপ্রদেশের অনিশ্চয়তার পরিস্থিতি কাটাতে আস্থা ভোটের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা উচিত। সম্প্রতি জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের পরেই মধ্যপ্রদেশে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হয়। জ্যোতিরাদিত্য ঘনিষ্ঠ ২২ জন বিধায়ক পদত্যাগের ইচ্ছাপ্রকাশ করে অধ্যক্ষর দ্বারস্থ হন। তারপরেই সঙ্কটে পড়ে মধ্যপ্রদেশের ক্ষমতাসীন কংগ্রেস সরকার।ইতিমধ্যেই ১০৭ বিধায়কের সমর্থন রয়েছে বিজেপির পক্ষে, যা কিনা সংখ্যাগরিষ্ঠতার চেয়ে ৩ জন বেশি। তাই মনে করা হচ্ছে এবার মধ্যপ্রদেশে ফের সরকার গড়তে চলেছে গেরুয়া দলই। আর তা যদি হয়, তাহলে তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির অভিজ্ঞ নেতা শিবরাজ সিং চৌহানেরই ক্ষমতায় ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।তাঁর সরকারের কাজের রূপরেখা প্রকাশ করে শুক্রবার, কমলনাথ বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন যে ১৬ জন কংগ্রেস বিধায়ককে ফুঁসলে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, “সত্যিই কী ঘটেছে তা কেবল সময়ই বলে দেবে। বিষয়গুলির তদন্ত করা হবে। তবে যারা এই ঘটনার জন্যে দায়ী তাঁদের অবশ্যই স্মরণ রাখতে হবে যে আগামিকালের পরে পরশু আসে, সবারই দিন বদলায়, তাই মনে রাখবেন, এর পরের দিনটিও অবশ্যই আসবে”।এর আগে চলতি সপ্তাহের গোড়াতেই করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতির কথা বলে ২৬ মার্চ পর্যন্ত বিধানসভার অধিবেশন স্থগিত করে দেয় কমল নাথ সরকার। তারপরেই এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যায় ভারতীয় জনতা দল। সুপ্রিম কোর্টে বিজেপি অভিযোগ করে, করোনা ভাইরাসের অজুহাত দেখিয়ে ভোট পিছিয়ে দিতে চাইছে কংগ্রেস। এরপরেই শুক্রবার আস্থা ভোট করানোর বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়। শীর্ষ আদালতের মতে, আস্থা ভোটের আগে খুব বেশি সময় দেওয়া হলে ঘোড়া কেনাবেচার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। তাই দ্রুত আস্থা ভোট করানোর পক্ষেই মত দেয় সুপ্রিম কোর্ট।আর বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশের পরেই প্রমাদ গোণেন কমল নাথ। কারণ তাঁর কাছে এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, আস্থা ভোট হলে তিনি হেরে যাবেনই। সেক্ষেত্রে আগে থেকেই ইস্তফা দেওয়ার পথ বেছে নেন পোড় খাওয়া ওই রাজনীতিবিদ।

