অগ্ন্যুৎপাতেও অবিকৃত! ২০০০ বছর আগের দেহ থেকে মিলল কাচে পরিণত হওয়া মস্তিস্কের কোষ!

নিজস্ব সংবাদদাতা খবর ২৪: একশো নয়, দুশো নয়, হাজার দুয়েক বছর আগের এক দেহের মধ্যে থেকে মস্তিষ্কের কোষ অবিকৃত অবস্থায় মিলল ইতালিতে। ভিসুভিয়াসের অগ্ন্যুৎপাতের ফলে দু’হাজার বছর আগ্নেয়গিরির তলায় চাপা পড়ে ছিল এই দেহ।দেহটি আবিষ্কার হয়েছিল ১৯৬০ সালে। ৭৯ খ্রিষ্টাব্দে অগ্ন্যুৎপাতের কারণে হারকিউলেনিয়াম শহরটি চাপা পড়ে যায়। গত শতাব্দীতে তার ধ্বংসাবশেষ থেকে উদ্ধার হয় দেহটি। ভিসুভিয়াসের হঠাৎ জেগে ওঠায় আগ্নেয়গিরির তলায় চাপা পড়ে যায় আস্ত একটি সভ্যতা। এমন ঘটনা ইতিহাসে আর দু’টি নেই।খবর বলছে, এক কাঠের বিছানায় মুখ নিচু করে শুয়ে থাকা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল দেহটি। অনুমান করা হয় রাজা অগাস্টাসকে দেবতা রূপে পুজো করা হতো সে সময়ে। আর সেই কাজটি করতেন এই মানুষটি। অর্থাৎ পেশায় তিনি ছিলেন পুরোহিত। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিল ২৫-এর কাছাকাছি।ইতালির Naples Federico II বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্ববিদ পিয়ের পাওলো পেট্রোন ছিলেন এই দেহ নিয়ে চলা গবেষক দলের নেতৃত্বে। পেট্রোন জানান যে ২০১৮ সালে যখন তাঁরা কাজ করছিলেন এই নিয়ে, দেহের মাথার খুলির ভেতর থেকে কাচের মতো কিছু তাঁরা দেখতে পেয়েছিলেন। তখন থেকেই ফের নতুন করে বিশদে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়।চলতি বছরের শুরুর দিকে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন-এ প্রকাশিত গবেষণায় পেট্রোন এবং তাঁর সহকর্মীরা উল্লেখ করেন অগ্ন্যুৎপাতের কারণে হওয়া তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ঠিক তার পরেই হিমপ্রবাহের জন্য মস্তিষ্কের কোষ কাচের মতো হয়ে গিয়েছে।অনুমান করা হচ্ছে যে এই মানুষটির মস্তিষ্ক প্রচণ্ড গরম লাভার সংস্পর্শে এসে প্রথমে নিশ্চয়ই একেবারে গলে গিয়েছিল। তার পর দ্রুত ঠাণ্ডায় জমে যাওয়ার ফলে কাচের মতো দেখাচ্ছে, বলছেন গবেষকরা। শুধু ব্রেন সেলই নয়, ২ হাজার বছর আগের ওই দেহ থেকে অবিকৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে স্নায়ু কোষ আর শিরদাঁড়াও। ব্রেইন সেলের মতো এগুলিও জমাটবাঁধা অবস্থাতেই রয়েছে।মার্কিন জার্নাল পিএলওএস ওয়ানে প্রকাশিত হয়েছে সাম্প্রতিক আবিষ্কারের কথা। অগ্ন্যুৎপাতের সময়কার ৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সহ্য করেও ভিট্রিফিকেশনের ফলে যে দু’হাজার বছর ধরে অবিকল থাকল দেহটি, এটি বোঝার পর থেকে নৃতত্ত্ববিদদের সামনে একটি নতুন দিগন্ত খুলে গিয়েছে।

