অতি দুঃসংবাদ! অতিমারীর প্রভাবে মানসিক অবসাদ গ্রাস করবে স্বাস্থ্যকর্মীদের, সমীক্ষায় চাঞ্চল্যকর তথ্য

নিজস্ব সংবাদদাতা খবর : অতিমারী নিয়ে এক সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন এক তথ্য যা ভাবাচ্ছে গবেষক ও চিকিৎসকদের। এই গবেষণা বলছে অতিমারী নিয়ে কাজ করা প্রায় ২৩.৪ শতাংশ স্বাস্থ্যকর্মী পিটিএসডি বা পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারে ভুগছেন। দুশ্চিন্তার বিষয় হল এই যে এই রোগের হাত থেকে এখনই মুক্তি পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।অতিমারী ছড়িয়ে পড়েছে প্রায় এক বছর হতে চলল, কিন্তু যে সব স্বাস্থ্যকর্মী একদম সামনে থেকে এই রোগ নিয়ে লড়ছেন, তাঁদের মধ্যে মানসিক অবসাদের সব লক্ষণ হয় থেকে যাচ্ছে, নয় তো দেখা দিচ্ছে। অবশ্য শুধু করোনার ক্ষেত্রেই এ কথা একমাত্র সত্যি নয়। ইতিপূর্বে কোভিড ১৯ ছড়িয়ে পড়ার আগে সার্স ও মার্স অতিমারীর বেলাতেও একই বিষয় লক্ষ্য করা গিয়েছে বলে জানাচ্ছে সমীক্ষা। সেই সময়েও যে সব স্বাস্থ্যকর্মীরা এই রোগের ভাইরাস-আক্রান্তদের নিয়ে দিনরাত কাজ করেছেন, তাঁদের মানসিক চাপ ছিল সাঙ্ঘাতিক।ইংল্যান্ড পূর্ব অ্যাংলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে যে অতিমারী ছড়িয়ে পড়ার এক বছর পরেও স্বাস্থ্যকর্মীরা পিটিএসডির মতো মানসিক অসুখ, অবসাদ, উত্তেজনা ইত্যাদির শিকার হতে পারেন।নরউইচ মেডিকাল স্কুলের অধ্যাপক রিচার্ড মেজার স্টেডম্যান বলছেন, নার্স, ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী বা হাসপাতালের সমস্ত কর্মীরা কোভিড ১৯-এর রোগীদের নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে ব্যস্ত আছেন। ফলে তাঁদের মধ্যে এক মানসিক অস্থিরতা দেখা দিচ্ছে।যে সব তথ্য এই গবেষকরা পেয়েছেন, সেখানে দেখা যাচ্ছে যে যখন অতিমারী চরমে পৌঁছেছে তখন ৩৪.১% স্বাস্থ্যকর্মী অসম্ভব মানসিক অবসাদ ও উত্তেজনায় ভুগেছেন। যদিও সেটা ছয় মাস পর ১৭.৯%-তে নেমে এসেছে, কিন্তু আবার এক বছর পর এক লাফে বেড়ে গিয়ে ২৯.৩% হয়ে গিয়েছে।সোফি অ্যালান, যিনি একজন শিক্ষানবিশ ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট, বলছেন যে, দেখা গিয়েছে যখন স্বাস্থ্যকর্মীরা সব চেয়ে বেশি অবসাদগ্রস্ত হয়েছেন, তখন অতিমারীর গ্রাফ চরমে পৌঁছেছিল। কিন্তু ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার এক বছর পরেও একই রকম অবসাদের চিহ্ন তাঁদের মধ্যে দেখা গিয়েছে, তা দূর হচ্ছে না।যাঁরা এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁরা আশা করছেন যে কোভিডরোগীদের সারিয়ে তোলা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ তো বটেই, কিন্তু তার সঙ্গে সঙ্গে যাঁরা এঁদের সারিয়ে তুলছেন তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকটাও হেলাফেলা করার মতো বিষয় নয়। তাই আশা করা যাচ্ছে যে এই গবেষণা গোটা বিশ্বে স্বাস্থ্যকর্মী ও ডাক্তারদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপরে আলোকপাত করবে এবং এ বিষয়ে সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

