ফের নিয়ম বদল ! পরীক্ষা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সোমবার বৈঠকে CU-র অধীনস্থ সব কলেজের প্রিন্সিপ্যাল

নিজস্ব সংবাদদাতা খবর ২৪: কীভাবে কোন নিয়মে নেওয়া হবে পরীক্ষা? সমস্ত জটিলতা কাটিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সোমবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ সব কলেজের প্রিন্সিপ্যালের সঙ্গে বৈঠক বসবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ইউজিসির তরফে চিঠি পাওয়ার পরেই পরীক্ষার বেশ কিছু নিয়ম বদলের সিদ্ধান্ত নেয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ৷ সেই নিয়েই সমস্ত দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাটাতে সোমবার অর্থাৎ আগামিকাল বৈঠক ৷ দুপুর একটা থেকে রাজাবাজার সায়েন্স কলেজ এর একটি অডিটোরিয়ামে এই বৈঠকটি হবে বলে জানা গিয়েছে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র ছাত্রীদের পরীক্ষা নিয়ে এবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভার্চুয়ালি নয় সামনাসামনি আলোচনায় বসতে চাইছে। স্নাতকোত্তর এর ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র ছাত্রীদের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পাঠানো থেকে শুরু করে উত্তর পত্র জমা দেওয়া পর্যন্ত ২৪ ঘন্টা সময় দেওয়া হবে না। সবথেকে বেশি হলে তিন ঘন্টার মধ্যেই প্রশ্নপত্র পাওয়ার পর তা লিখে উত্তরপত্র স্ক্যান করে অনলাইন মারফত পাঠিয়ে দিতে হবে কলেজের অধ্যাপক অধ্যাপিকা দের কাছে। শুক্রবার বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং বিভিন্ন বিভাগের বোর্ড অফ স্টাডিস এর সঙ্গে বৈঠক করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেই বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে। প্রসঙ্গত আগস্টের শেষ সপ্তাহেই বিশ্ববিদ্যালয় তরফ এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের পরীক্ষা নেওয়া হবে অনলাইনে ওপেন বুক পদ্ধতিতে। সে ক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীদের ২৪ ঘন্টা সময় দেওয়া হবে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পাঠানোর সময়সীমা থেকে শুরু করে উত্তর পত্র জমা দেওয়া পর্যন্ত।ইউজিসি ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস কমিশন তাদের গাইডলাইন মোতাবেক জানিয়ে দেয় বাড়িতে বসে যদি ওপেন বুক পদ্ধতিতেই পরীক্ষা নেওয়া হয় এবং সে ক্ষেত্রে যদি ২৪ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয় কোনও ছাত্রছাত্রীকে, তাহলে তা পরীক্ষা বলা যায় না। মূল্যায়নের এই পদ্ধতিকে তাহলে বলা হবে self-assessment। ইউজিসি-র তরফে জানানো হয়, প্রশ্নপত্র পাঠানো থেকে শুরু করে উত্তরপত্র জমা দেওয়া পর্যন্ত দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় দেওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে উত্তর পত্র জমা দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত আধঘণ্টা সময় দেওয়া যেতে পারে ছাত্র-ছাত্রীদের। যদিও সময়সীমাকে মাথায় রেখে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখার জন্য প্রশ্নের সংখ্যা কমানো হবে।চলতি সপ্তাহেই ইউজিসি-র তরফেই নির্দেশিকা আসার পর পরেই তৎপরতা শুরু হয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের। কেননা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আগেই নোটিফিকেশন দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে ওপেন বুক পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নেবে অনলাইনে। অর্থাৎ বাড়িতে বসেই ছাত্রছাত্রীরা বই দেখে পরীক্ষা দিতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পাঠানোর সময় সীমা থেকে শুরু করে উত্তর লেখা এবং স্ক্যান করে সেই উত্তর পত্র কলেজের অধ্যাপক অধ্যাপিকাদের কাছে পাঠানোর জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় পাবেন ছাত্রছাত্রীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে পরীক্ষা সূচি ও প্রকাশ করা হয়। কিন্তু তারপরে ইউজিসি তরফে আপত্তি সূচক চিঠি আশায় আবার নিয়ম বদলাল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।ইতিমধ্যেই ইউজিসি-র থেকে অক্টোবর মাসেই পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি পেয়েছে রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতর। তবে সেই অনুমতি পাওয়ার পর পর ও ইউজিসি-র তরফ সে বেশ কিছু শর্ত দিয়ে দেওয়া হয়। যার মধ্যে বাড়িতে বসে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দিলেও এই শর্তটিও দেওয়া হয়েছে। তবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ প্রচুর ছাত্র-ছাত্রী গ্রামাঞ্চলে থাকায় এবং একাধিক কলেজ থাকায় আদৌ এই সময়সীমার মেনে কতটা উত্তর পত্র জমা নেওয়া সম্ভব হবে তা নিয়ে অবশ্য সংশয় প্রকাশ করছেন অধ্যাপিকাদের একাংশ।যদিও সময়সীমা কম থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে প্রশ্নের সংখ্যা কমানো হবে। অর্থাৎ ইতিমধ্যে যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে প্রশ্নপত্র তৈরি হয়ে গেছে একাধিক অপশন দেওয়া হবে প্রশ্নের মধ্যেই ছাত্র-ছাত্রীদের। সে ক্ষেত্রে খুব কম সময়ের মধ্যেই তাহলে ছাত্রছাত্রীরা প্রশ্নের উত্তর লিখে তা অনলাইনে স্ক্যান করে পাঠিয়ে দিতে পারবেন বলে মনে করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশ। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপা-র মুখপাত্র তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুজয় ঘোষ বলেন, “ইউজিসি-র তরফে এইরকম নির্দেশ আসার পর পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা সংক্রান্ত নিয়মে আবার বদলানো হচ্ছে। কিন্তু এই নয়া নিয়মে গ্রামাঞ্চলের ছাত্রছাত্রীরা কতটা পারবেন কম সময়সীমার মধ্যে উত্তরপত্র অনলাইনে স্ক্যান করে জমা দিতে তা নিয়ে সংশয় থাকবেই। কারণ বিভিন্ন জায়গায় এখনও পর্যন্ত ইন্টারনেট সংযোগ দুর্বল রয়েছে। তাই এটাও একটা চিন্তার বিষয় আমাদের কাছে।”