নাগা শান্তি আলোচনার দায়িত্ব গোয়েন্দা কর্তাকে দিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি

নিজস্ব সংবাদদাতা খবর ২৪:নাগাল্যান্ডে (Nagaland) শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে চুক্তি হলেও ভিতরে ধিকি ধিকি জ্বলছে অসন্তোষের আগুন। ওই রাজ্যের রাজ্যপাল আরএন রবিও জানিয়েছেন যে, গত কয়েকমাস ধরেই সেখানকার বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী নাগা শান্তি আলোচনার (Naga Peace Talks) বিরোধিতা করছে। একটি কেন্দ্রীয় সূত্র এনডিটিভিকে জানিয়েছে, গোটা ঘটনায় “বিচলিত” প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে গোয়েন্দা প্রধানকে দায়িত্ব দিয়েছেন। ইনটেলিজেন্স ব্যুরোর প্রধান অরবিন্দ কুমারকে আপাতদৃষ্টিতে বেলাইন হতে চলা এই আলোচনার প্রক্রিয়াকে ফিরিয়ে আনতে হবে ঠিক জায়গায়। “গত ৬ বছর ধরে আরএন রবি, কেন্দ্রীয় মুখপাত্র হিসাবে যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে বিভিন্ন নাগা গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনাও করলেও গত দশ-এগারো মাসে সেখানকার পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি”, জানিয়েছেন এক ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্তা। তিনি আরও জানিয়েছেন,প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় চাইছে, নাগাল্যান্ডের এই অসন্তোষের আগুন নেভানোর দায়িত্ব নিন আইবির বিশেষ নির্দেশক অক্ষয় কুমার মিশ্রও।বিদ্রোহী দলগুলির মধ্যে বৃহত্তম এনএসসিএন (আইএম) (NSCN), আরএন রবি এবং নতুন ন্যাশনাল নাগা পলিটিক্যাল গ্রুপস(এনএনপিজি) – এই ৩ পক্ষের মধ্যে নাগাল্যান্ড নিয়ে যে মতবিরোধ হয়েছে তা নিয়ে বিশেষ উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্যপাল রবি সরাসরি নাগাল্যান্ডের নির্বাচিত সরকারকে লক্ষ্য করে আক্রমণ শানিয়েছিলেন যা নিয়ে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। নাগাল্যান্ডের রাজ্যপাল স্বাধীনতা দিবসে তাঁর ভাষণে বলেছিলেন: “নাগাল্যান্ড অন্যতম সেরা মানবিক ও প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে, আজ এই রাজ্যটি উত্তর-পূর্ব অঞ্চল সহ গোটা দেশের ক্ষেত্রে সবচেয়ে অশান্ত রাজ্য হিসাবে চিহ্নিত হচ্ছে।” তাঁর এই ভাষণের পরেই বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে সেরাজ্যে। গত ১১ মাস ধরেই দেখা যাচ্ছিল যে, আরএন রবির সঙ্গে বিভিন্ন নাগা গোষ্ঠীর মতবিরোধ ক্রমশই বাড়ছে।এদিকে কিছুদিন আগেই ফের একবার পৃথক নাগাল‍্যান্ডের দাবিতে সরব হন এনএসসিএন (আইএম)-এর প্রধান টি মুইভা। তিনি নিজেদের দলগত অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, নাগারা কখনো ভারতের সঙ্গে যুক্ত হবে না।‌ পৃথক পতাকা ও পৃথক সংবিধান ছাড়া নাগা শান্তি আলোচনার কোনো সম্মানজনক সমাধান থাকতে পারে না।মুইভা আরও বলেন, “ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্টে সম্মত হয়ে সার্বভৌম ক্ষমতা ভাগাভাগির জন্য ভারতীয় নাগরিকদের ‌সঙ্গে সহাবস্থান করবে নাগারা। কিন্তু তাঁরা ভারতের ‌সঙ্গে একীভূত হবে না কখনো।”তিনি আরো বলেন, “ভারতের‌ সরকার বা ভারতের ‌সংবিধানকে নাগারা কখনোই মেনে নেয়নি। ইতিহাসও এই সত‍্য স্বীকার করবে। আমরা আজও তা মেনে নেব না এবং আগামীদিনেও মেনে নেব না।‌ স্বীকৃতি দিক বা না দিক, আমাদের নিজস্ব পতাকা ও নিজস্ব সংবিধান রয়েছে। এই পতাকা ও সংবিধান আমাদের স্বীকৃত সার্বভৌম সত্ত্বা এবং নাগা জাতিসত্ত্বার প্রতীক।”তিনি স্পষ্ট করেই জানিয়ে দেন, পতাকা ও সংবিধান ছাড়া নাগা শান্তি আলোচনার কোনো সম্মানজনক সমাধান থাকতে পারে না।