বর্ষায় খানাখন্দে ‘মারণফাঁদ’ দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে, প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা

নিজস্ব সংবাদদাতা খবর ২৪: বর্ষায় বেহাল ২ নম্বর জাতীয় সড়ক। ডানকুনি থেকে বর্ধমান পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশেই একাধিক ছোট বড় গর্ত ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। যার জেরে নিত্যদিন বাড়ছে দুর্ঘটনা। প্রাণ হারাচ্ছেন একাধিক ব্যক্তি। কবে অতি গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তা সংষ্কার করা হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।ডানকুনি থেকে আসানসোল। ২ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে প্রতিদিন কয়েক লক্ষ গাড়ি যাতায়াত করে। এর মধ্যে একটা বড় অংশ হচ্ছে পণ্যবাহী লরি। এই রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে ডানকুনি, সিঙ্গুর, গুড়াপের মতো জায়গায় রাস্তার হাল বেহাল হয়েছে। জাতীয় সড়কের ওপরে ছোট, বড় নানা গর্ত হয়েছে। ফলে জাতীয় সড়ক ধরে দ্রুত গতিতে গাড়ি চলতে গিয়ে যেমন বাধা আসছে তেমনই এই খারাপ অংশের ওপর দিয়ে গাড়ি চলাচল করার জন্যে রাস্তার অবস্থা আরও বেশি খারাপ হতে শুরু করে দিয়েছে। নামেই দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে।গত ছয় মাস রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তৈরি হয়েছে রাস্তায় রয়েছে গভীর গর্ত। প্রতিদিন হচ্ছে দুর্ঘটনা। হেলদোল নেই NH-2 কর্তৃপক্ষের। বর্ধমান থেকে ডানকুনি প্রায় ৬৫ কিলোমিটার রাস্তা। টোল ট্যাক্স দিয়ে চলাচল করে বাইক ছাড়া সমস্ত গাড়ি। কিন্তু লকডাউন পরিস্থিতির কারণে ট্রেন বন্ধ থাকায় বর্ধমান থেকে কলকাতা যাওয়ার দ্রুততম রাস্তা এই দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে। প্রতিদিন এই লকডাউন পরিস্থিতিতে কয়েক হাজার বাইক আরোহী যাতায়াত করে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে। হুগলির গুড়াপ থানা থেকে ডানকুনি থানা পর্যন্ত প্রায় ৪৫ কিলোমিটার রাস্তায় কয়েক কিলোমিটার অন্তর তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। বিশেষ করে দাদপুর থানা, সিঙ্গুর থানা, চন্ডীতলা থানা ও ডানকুনি থানা এলাকায় এক কিলোমিটার অন্তর রয়েছে রাস্তায় গর্ত।ইতিমধ্যেই এই লকডাউন পরিস্থিতিতে বাইক গর্তে পড়ে মৃত্যু হয়েছে অনেকের। সম্প্রতি চন্ডীতলা থানার কাঁপাসাড়িয়া গ্রামের কাছে এই গর্তে পড়ে মৃত্যু হয়েছে কলকাতার এক পুলিশ অফিসারের। দ্রুতগতিতে চলাচলকারী এই রাস্তায় হঠাৎ করে গর্তে বাইক পড়ে আহত হচ্ছেন প্রতিদিন বাইক আরোহীরা। ক্ষতি হচ্ছে বাইকের যন্ত্রাংশের। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রশাসনের নজরদারির অভাব নিয়ে। এছাড়াও আরেক বাইক আরোহী যিনি দুর্ঘটনার কারণে বাইকের ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন।অরুপ মৈত্র, ডানকুনির বাসিন্দা প্রতিদিন যাতায়াত করে এই রাস্তা দিয়ে তিনি জানাচ্ছেন, “গাড়ির ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু কাউকে কিছু বলেও লাভ হচ্ছে না।” একই বক্তব্য, সিঙ্গুরের বাসিন্দা, সৌমেন রাণার। তিনি জানাচ্ছেন, “বাচ্চাদের নিয়ে বাইকে করে যাতায়াত করা যাচ্ছে না। রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছে।” রাস্তার অবস্থা যে খারাপ হয়েছে তা স্বীকার করে নিয়েছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। সংস্থার প্রজেক্ট ডিরেক্টর স্বপন মল্লিক বলেন, “রাস্তা সংষ্কারের কাজ শুরু হচ্ছে। প্যাচ ওয়ার্ক আমরা করছি। বর্ষা পুরোপুরি মিটে গেলে কাজ হবে। তবে প্রতিদিন আমাদের এজেন্সির লোকেরা কাজ করছে।”

