পুলিশের ঘরেই চুরি! আইনরক্ষকদের নজর এড়িয়ে পুলিশ কিয়স্কে হানা

নিজস্ব সংবাদদাতা খবর ২৪: করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের জেরে আর্থিক সচ্ছলতায় ধাক্কা খেয়েছে অনেকেই। রোজগারের অভাবে অনেকেই অসৎ পথ বেছে নিচ্ছেন। যারা আগে চুরি না করেও চেষ্টা করতেন অভাব-অনটনের মধ্যে পেট চালানোর, তাদের কাছে চুরি করা ছাড়া উপায় নেই বর্তমানে।ময়দান থানা এলাকার এক ২২ বছরের যুবকও তার উদাহর। যুুবকটির মাঝে মধ্যেই চলত হাত সাফাইয়ের কাজ, করোনা পরিস্থিতিতে যে সেটাই প্রধান অস্ত্র হয়ে উঠবে শেখ আফরোজের তা জানা ছিল না কারোর। করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের জেরে ময়দানে বন্ধ ঘোড়া চড়ানো। রবিবার ও শনিবার ময়দান ও ভিক্টোরিয়ার বিপুল জমায়েতে তার পকেটে টাকা আসত। করোনা ও লকডাউনের জেরে ঘোড়ার কাজ বন্ধ হওয়ায় চুরির পথই বেছে নিয়েছে আফরোজ।পুলিশরের স্কিয়ক্সেই যে তার নজর পড়বে তা জানতে পেরে হতবাক অনেকেই। কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বা থানার স্কিয়স্কে মাঝে মধ্যেই আসত নতুন নতুন অ্যালুমিনিয়ামের জানালা। বাজার মূল্য খুব বেশি না হলেও একসঙ্গে অনেকগুলোর মূল্য যে লকডাউনে আর্থিক সঙ্কট থেকে বাঁচাবে তা ভেবেছিল আফরোজ। বেশ কিছু দিন ধরেই পুলিশের নজর আসছিল বিভিন্ন স্কিয়ক্স থেকে উধাও অ্যালুমিনিয়ামের জানালা। সেই জানালা যে চুরি হচ্ছে তা বুঝতে সময় লাগেনি পুলিশের।বিভিন্ন সময় নজরে আসে এক ব্যাক্তি রাতের অন্ধকারে মাথায় করে নিয়ে যাচ্ছেন বেশ কিছু ভারি জিনিস। পুলিশের সন্দেহ বাড়তে থাকে সেখানেই, বিভিন্ন সময় নজরদারিতেই ধরা পড়ে আফরোজের আনাগোনা। তার মধ্যে আফরোজের যাতায়াত বাড়তেই একের পর এক উধাও হতে থাকে জানালা। পুলিশের খাতায় আফরোজের নাম পরিচিত থাকলেও পাকা চোর হিসাবে তার নাম কখনও আসেনি, হাত সাফাইয়ের কাজও যে খুব তার অভ্যাস নেই তা জানত পুলিশ। তবে বেশ কিছু দিন ধরে জানালা উধাও ও যুবকের আনাগোনা সন্দেহের জন্ম নেয়। হেস্টিংস থানার অফিসারদের নজর রাখতেই কেল্লাফতে!সেই থানার একটি জায়গায় শেখ আফরোজ বিভিন্ন অ্যালুমিনিয়ামের জানালা রাখছে খবর পায় হেস্টিংস থানা। হাতেনাতে ধরা পরে ২২ বছরের সেই যুবক। পুলিশের নজর আসতেই কয়েক ঘণ্টারমতো মধ্যেই গ্রেফতার করা হয় ঐ যুবককে। চুরি যাওয়া সামগ্রী যার বাজার মূল্য প্রায় দশ হাজার টাকা। পাঁচ থেকে সাতটি অ্যালুমিনিয়ামের জানালা উদ্ধার হয় অভিযুক্তের থেকে। তদন্তকারী অফিসারের প্রশ্নের মুখে উঠে আসে আফরোজের দুর্দশার কথা। অভিযুক্ত জানায়, লকডাউনের জেরে ময়দানের একটি মাত্র রোজগার বন্ধ হতেই টান পড়েছে পেটে। অভিযুক্তকে চুরির অভিযোগে গ্রেফতার করা হলেও লকডাউনের আর্থিক সঙ্কটের ছবিটাই যেন ফুটে উঠেছে ঘটনায়।